Contents
১. পরিচিতি ও ইতিহাস
- জেলার পরিচিতি: সিরাজগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত। এটি যমুনা নদীর তীরবর্তী একটি প্রাচীন জনপদ, যা কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং তাঁতশিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ।
- ইতিহাস: সিরাজগঞ্জের ইতিহাস প্রাচীনকাল থেকে শুরু, ব্রিটিশ শাসনামলে এখানে ব্যবসার গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। জেলা ১৮৭৬ সালে মহকুমা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৪ সালে পূর্ণাঙ্গ জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
২. ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ু
- ভৌগোলিক অবস্থান: সিরাজগঞ্জ জেলা ২৪° – ২৫° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯° – ৯০° পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। এটি পূর্বে জামালপুর, উত্তরে বগুড়া ও নাটোর, পশ্চিমে পাবনা এবং দক্ষিণে টাঙ্গাইল জেলা দ্বারা বেষ্টিত।
- জলবায়ু: গ্রীষ্মে তাপমাত্রা ৩৫°-৩৭°C এবং শীতে ১০°-১৫°C পর্যন্ত নেমে আসে। বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।
৩. প্রশাসনিক কাঠামো ও উপবিভাগ
- উপজেলা: সিরাজগঞ্জ জেলায় মোট ৯টি উপজেলা রয়েছে: সিরাজগঞ্জ সদর, কাজীপুর, তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, বেলকুচি, চৌহালী, কামারখন্দ, এবং রায়গঞ্জ।
- পৌরসভা: জেলায় ৬টি পৌরসভা এবং ৮২টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে।
৪. জনসংখ্যা ও জনমানবিক বৈশিষ্ট্য
- মোট জনসংখ্যা: সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী সিরাজগঞ্জ জেলার জনসংখ্যা প্রায় ৩৫ লক্ষ।
- ভাষা: বাংলা প্রধান ভাষা হলেও স্থানীয় কিছু আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহারও রয়েছে।
৫. অর্থনীতি ও শিল্প খাত
- তাঁত শিল্প: শাহজাদপুর ও বেলকুচিতে উন্নত মানের তাঁত উৎপাদন হয়।
- কৃষি: ধান, গম, পাট এবং সবজি প্রধান কৃষি পণ্য।
৬. শিক্ষা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ, শাহজাদপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, এবং সিরাজগঞ্জ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট উল্লেখযোগ্য।
৭. স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা
- সরকারি হাসপাতাল: সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে।
- বেসরকারি ক্লিনিক: বিভিন্ন ক্লিনিক স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছে।
৮. পর্যটন আকর্ষণ ও দর্শনীয় স্থান
- রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক স্থান।
- যমুনা সেতু: দেশের অন্যতম বড় সেতু।
৯. পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা
- সড়ক যোগাযোগ: ঢাকা থেকে সরাসরি বাস ও ট্রেন সার্ভিস রয়েছে।
- রেল যোগাযোগ: সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলপথ।
১০. স্থানীয় সরকার ও রাজনীতি
- প্রতিনিধিত্ব: জাতীয় সংসদে সিরাজগঞ্জ জেলার বেশ কয়েকটি আসন রয়েছে।
- জেলা প্রশাসন: জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার জেলার প্রশাসন পরিচালনা করেন।
১১. বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর: এখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য রচনার একটি সমৃদ্ধ অধ্যায় রয়েছে।
- বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী: স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব।
১২. জরুরী যোগাযোগ
- জরুরি সেবা: পুলিশ – ৯৯৯, ফায়ার সার্ভিস – ১০২।
১৩. সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য
- উৎসব: পহেলা বৈশাখ, রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উদযাপন হয়।
- লোকসংস্কৃতি: ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া ও লোককবিতা এখানে জনপ্রিয়।
১৪. উন্নয়ন প্রকল্প ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
- নদী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্প: যমুনা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
Leave a Reply